কাঁচামালের উৎপাদক বা আমদানিকারকের নিকট হতে অধিক পরিমানের কাঁচামাল ক্রয় করে তা খুচরা ব্যযবসায়ীর নিকট বিক্রয় কার্যকে পাইকারি ব্যবসা বলা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে অন্যতম ব্যবসা হলো পাইকারি ব্যবসা। এই কাঁচামালের ব্যবসা যেমন অনেক লাভ হয়। তেমন আবার লোকসান ও হয়ে থাকে। এই কাঁচামালের পাইকারি ব্যবসা বুঝে শুনে করতে হয়। এই ব্যবসা করতে হলে মূলধন যেমন বেশি লাগে তেমনি লাভের  আশা একটু বেশি করা যায়। তাছাড়া যাদের মূলধন বেশি আছে তারা চাইলে এই কাঁচামালের পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

পাইকারি কাঁচামালের ব্যবসা কি ভাবে শুরু করবেন

পাইকারি ব্যবসা করতে হলে প্রথমে আপনার মূলধনের উপর নির্ভর করবে। তারপর আপনার গুদামঘর বা দোকানের প্রয়োজন। যেখানে মাল এনে আপনি রাখবেন। সেই জায়গাটা হতে হবে বাজারের মেইন রাস্তার পাশে যাতে করে ক্রেতারা খুব সহজে চিনতে পারে। যেখান থেকে মাল আনবেন সেখানের ব্যবসায়ীদের সাথে পরিচয় থাকতে হবে। এবং আপনার মাল আনতে হলে গাড়ি বা ট্রাক এর প্রয়োজন হবে। তাছারা আপনার খুচরা ব্যবসায়ীদের সাথে ভালো সম্পর্ক বা পরিচয় থাকতে হবে।

পাইকারি ব্যবসা তিন ভাবে করা যায়

১।  উৎপাদনকারীর কাজ থেকে সরাসরি পণ্য ক্রয় করে বরাবর খুচরা বিক্রেতাদের কাছে হস্তান্তর করে থাকেন।

২।  যারা উৎপাদনকারীর কাজ থেকে পণ্য না এনে সাধারনত,কাওরান বাজার বা যাত্রাবাড়ি থেকে কাঁচামাল পাইকারি কিনে সরাসরি ক্রেতাদের নিকট হস্তান্তর করা।

৩। অনেক ব্যবসায়ী আছে যারা নাকি উৎপাদনকারীর কাজ থেকে পণ্য না কিনেও পাইকারি ব্যবসা করতাছে। যেমন নিজের বাড়ির আশে পাশে কিছু জমি থাকলে ঐজমিতে বিভিন্ন ধরনের পণ্য উৎপাদন করে যা সরাসরি খুচরা ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করা।

See also  চাউলের পাইকারি ব্যবসা! ১ লাখ টাকা পুজি নিয়ে মাসে ইনকাম করুন ৫০ হাজার টাকা

কাঁচামালের ব্যবসায় লাভ

পাইকারি ব্যবসা মানেই অধিক লাভবান হওয়া। উৎপাদকারীর কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে সরাসরি খুচরা বিক্রেতাদের কাছে হস্তান্তর করতে পারলেই লাভবান হওয়া যায়। তাছারা মৌসমের পণ্য ক্রয় করে অন্য মৌসমে বিক্রয় করলে অধিক লাভবান হওয়া যায়।

পাইকারি ব্যবসায় লোকসান

পাইকারি ব্যবসায় যেমন লাভ হয় তেমন একটু লোকসান হতেই পারে। যদি সঠিক পণ্য বা ভালো মানের পণ্য না ক্রয় করতে পারে তাহলে লোকসান দেখা দিবে। সেই দিকে পত্যক ব্যবসায়ীদের নজর রাখতে হবে। আপনি যদি নিম্ন মানের পণ্য ক্রয় করে আনেন তাহলে সেই পণ্য গুলো কোন ব্যবসায়ীরা ক্রয় করতে ইচ্ছুক হবে না।

কাচাঁমালের কাওরানবাজার

ঢাকা শহর দিনের বেলায় ব্যস্ত থাকলেও ঢাকা  কাওরান বাজারের চিত্র তার ঠিক উল্টো । রাত ৯ টার দিকে ঢাকা কাওরান বাজার যেন ভোরের কাকডাকা। ঢাকা  কাওরান বাজারে রাত ১০ টার পর থেকেই আড়ৎ গুলোতে জ্বলতে শুরু করে হালকা থেকে ভারি ভারি লাইট। মালিক আসার আগে থেকেই শুরু হয় আড়ৎ পরিষ্কারের কাজ। আস্তে আস্তে বারতে থাকে রাত এর সজ্ঞে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ব্যস্ততা। শাকসবজি,কাচাঁমালের এবং ফলমূলের ট্রাক এসে ভির করে ঢাকা মহাসড়ক। ট্রাক থেকে মালা-মাল নামানো হয় ভ্যানে করে। এক একটি ভ্যান সাধারণত পেয়ে থাকেন ছোট বস্তার জন্য ১৫-২০ টাকা আর বড় বস্তার জন্য ৩০-৫০ টাকা। রাত ১২ টার পর থেকেই ফল,সবজি,তরিতরকারি, মাছ,মুরগী ইত্যাদি পণ্য দিয়ে বোঝাই হয়ে যায় এই কাওরান বাজার। রাত ২টার পর দেখা যায় আরেক শ্রেণির মানুষ যারা ক্রয় করবেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসে এই কাওরান বাজার। রাত ২টার থেকে দেশের বিভিন্ন শহর বা জেলা থাকে আসা শুরু  করে পিকাপ ভ্যান ক্রয়কৃত পণ্য নেওয়ার জন্য। আর সকাল ৮ টার আগেই ত্যাগ করতে হয় ঢাকা রাজধানী থেকে । সকল  ১০ টা হতেই ঘুম আচ্ছন্ন হয়ে যায় এই কাওরান বাজার। আপনি ও ইচ্ছা করলে সরাসরি কাওরানবাজার থেকে পাইকারি কাচাঁমাল ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুচরা বাজারে পাইকারি দামে বিক্রয় কতে পারেন।

কাচাঁমাল যাত্রাবাড়ী

কাচাঁমালের  জগতে সব থেকে বড় পাইকারি মার্কেট হলো এই যাত্রাবাড়ি। বাংলাদেশের  সবচেয়ে  জনপ্রিয় বাজার এই যাত্রাবাড়ি। দেশের বিভিন্ন জেলার কৃষকরা তাদের তরিতরকারি নিয়ে আসেন এই যাত্রাবাড়ি। সন্ধা হতেই না হতে দেখ যায় বিভিন্ন  ধরনের কাচাঁমালের টাক। আবার মধ্য রাত থেকে দেখা যায় দেশের  বিভিন্ন জেলার পাইকাররা পিক আপ ভ্যান নিয়ে আসেন কাচাঁমাল কিনে নিয়ে আসার জন্য। এমন করে চলতে থাকে সকাল ৮ট পর্যন্ত। তার পর থেকে শুরু হয় খুচরা বেচাকেনা। চলতে থাকে সারা দিন।